সময়ের সাথে সাথে স্মার্টফোনে গেমিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সেই সাথে বাড়ছে গেমিং ফোন এর চাহিদাও। বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে স্মার্টফোনে ক্যাজুয়াল গেমের পাশাপাশি কনসোল কোয়ালিটির গেমেও খেলা সম্ভব।গেমিং ফোন মূলত রিফ্রেশ রেট, স্কিন সাইজ, গেমিং মোড, কুলিং সিস্টেম এবং আরও অনেক কিছুর উপর ফোকাস করে তৈরি করা হয়ে থাকে। আর গেমিং ফোনগুলোর স্পেক হাই হওয়ায় ফোনগুলোর দামও বেশি হয়ে থাকে।কিন্তু হার্ডকোর গেমারদের জন্য এটা কোন বিষয়ই না। বর্তমান বাজারে বেশ কিছু গেমিং স্মার্টফোন রয়েছে, যেগুলো একজন গেমারকে ভালো গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দিতে সক্ষম। নিচে এমন কিছু স্মার্টফোন আজকের আর্টিকেলে তুলে ধরা হলো। $ads={1}আরও পড়ুনঃ
স্মার্টফোন কেনার আগে যে ১০টি বিষয় জানা জরুরি
১০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা স্মার্টফোন
২০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা স্মার্টফোন
৩০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা স্মার্টফোন
সেরা ৮ গেমিং ফোন ২০২০
1. Asus ROG Phone 3
গেমিং ফোন এর কথা উঠলে সবার আগে নাম আসে Asus ROG Phone 3 এর। একজন মোবাইল গেমারের যা দরকার তার সবাই ৫জি সমর্থিত এই ফোনে রয়েছে। আসুসের এই ফোনটিতে রয়েছে ৬.৫৯ ইঞ্চি ১৪৪ হার্টজ এইচডিআর ১০+ অমলেড স্ক্রিন, যার রেজুলেশন ১০৮০*২৩৪০ পিক্সেল। ফোনটির পেছনে রয়েছে আরজিবি প্যানেল। অ্যান্ড্রয়েড ১০ অপারেটিং সিস্টেম চালিত ফোনটিতে গেমারদের দারুণ গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দেওয়ার জন্য থাকছে ২.৯৬ গিগাহার্টজ অক্টো-কোর স্ন্যাপড্রাগন ৮৬৫+ চিপসেট এবং এড্রিনো ৬৫০ জিপিইউ।ফোনটিতে মিলবে ১২/১৬ জিবি র্যাম ও ১২৮/২৫৬/৫১২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। ফোনটির পিছনে রয়েছে ৬৪+১৩+৫ মেগাপিক্সেল ট্রিপল ক্যামেরা। আর এর সামনে রয়েছে ২৪ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এর ক্যামেরা দিয়ে ভালো ছবিও তুলা যাবে।এতে লম্বা সময় গেমিং করার জন্য থাকছে ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ৬ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ারের একটি বিশাল বড় ব্যাটারি। গেমিং এর সময় যেন মোবাইল গরম না হয়ে যায় তার জন্য এতে রয়েছে কাস্টমাইজড ইন-কেস কুলিং সলিউশন।এছাড়াও ইন-গেম অ্যাকশন সহজে কন্ট্রোল করার জন্য ফোনটিতে রয়েছে আল্ট্রা-রিস্পনসিভ এয়ারট্রিগার সেন্সর। সেইসাথে এতে থাকছে ‘এক্স মোড’ যা গেমিং এর জন্য ফোনকে অপটিমাইজড করতে সাহায্য করে থাকে।2. Xiaomi Black Shark 3 Pro
গেমিং ফোন হিসেবে Xiaomi Black Shark 3 Pro এর বেশ সুনাম রয়েছে। শাওমির এই ৫জি সমর্থিত ফোনটি বাজেটের মধ্যে সেরা গেমিং ফোন। ফোনটিতে রয়েছে ৭.১ ইঞ্চি ৯০ হার্টজ অমলেড স্ক্রিন, এর রেজুলেশন ১৪৪০*৩১২০ পিক্সেল।মোবাইল গেমারদের ভালো গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দেওয়ার জন্য এতে থাকছে ২.৮৪ গিগাহার্টজ অক্টো-কোর স্ন্যাপড্রাগন ৮৬৫ চিপসেট এবং এড্রিনো ৬৫০ জিপিইউ।অ্যান্ড্রয়েড ১০ অপারেটিং সিস্টেমের ফোনটিতে আরো থাকছে ৮/১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬/৫১২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। গেমিং এর পাশাপাশি ছবি তোলার জন্য ফোনে রয়েছে ৬৪+১৩+৫ মেগাপিক্সেল ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা এবং ২০ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।এতে ব্যাকআপ সুবিধা দিতে থাকছে ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ৫ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ারের একটি বড় ব্যাটারি। ৬৫W ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তির সাহায্যে ফোনটি ৩৮ মিনিটে ১০০% পর্যন্ত চার্জ করা যাবে।ইন-গেম অ্যাকশন সহজে কন্ট্রোল করার জন্য শাওমির এই ফোনটিতে রয়েছে পপ-আপ গেমিং ট্রিগার। এছাড়া উন্নত কুলিং সিস্টেম আর শাওমির নিজস্ব গেমিং মোড তো থাকছেই।3. iPhone 11 Pro Max
গেমিং ফোন এর কথা হচ্ছে অথচ অ্যাপলের আইফোন সিরিজের কোন ফোন থাকবে না তা কি করে হয়? iPhone 11 Pro Max নিসন্দেহে বর্তমান সময়ের একটি সেরা গেমিং স্মার্টফোন। অ্যাপেলের এই ফোনটিতে রয়েছে ৬.১ ইঞ্চি ১২০ হার্টজ সুপার রেটিনা এক্সডিআর ওলেড ডিসপ্লে, এর রেজুলেশন ১২৪২*২৬৮৮ পিক্সেল।অ্যাপেলের এই ফোন দিয়ে গেমিং করার জন্য থাকছে সুপার পাওয়ারফুল ২.৬৫ গিগাহার্টজ হেক্সা-কোর অ্যাপল এ১৩ বায়োনিক চিপসেট। সাথে গ্রাফিক্স সুবিধা দিতে থাকছে অ্যাপলের ৪ কোর এর একটি জিপিইউ।ফোনটি চলবে অ্যাপলের আইওএস ১৩ অপারেটিং সিস্টেমের উপর, যা পরবর্তীতে আইওএস ১৩.৪ তে আপগ্রেড করা যাবে। ফোনটিতে মিলবে ৪ জিবি র্যাম ও ৬৪/২৫৬/৫১২ জিবি NVMe ইন্টারনাল স্টোরেজ। এই ফোনটি কেবল সেরা গেমিং ফোনই নয়, একই সাথে এটি সেরা ক্যামেরা ফোনও বটে। আইফোন ১১ প্রো ম্যাক্সে রয়েছে ১২+১২+১২ মেগাপিক্সেল ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা এবং ১২ মেগাপিক্সেল ডুয়েল ফ্রন্ট ক্যামেরা।ফোনটিতে ব্যাকআপ সুবিধা দিতে থাকছে ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ৩ হাজার ৯৬৯ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। ১৮W ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তির সাহায্যে ফোনটি ৩০ মিনিটে ৫০% পর্যন্ত চার্জ করা যাবে। সাথে থাকছে ওয়ারলেস চার্জিং ফিচার।4. OnePlus 8 Pro
OnePlus 8 Pro ওয়ানপ্লাসের তৈরি ৫জি সমর্থিত একটি বেস্ট গেমিং স্মার্টফোন। একে গেমিং ফোন হিসাবে বিশেষভাবে মার্ক করা না হলেও ওয়ানপ্লাসের এই ফোন কিন্তু লিস্টে থাকার দাবি রাখে। এই ফোনটিতে থাকছে পাঞ্চ-হোল স্টাইলের ১২০ হার্টজ ৬.৭৮ ইঞ্চি ফ্লুইড অমলেড ডিসপ্লে, এর রেজুলেশন ১৪৪০*৩১৬৮ পিক্সেল।ভালো গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দেওয়ার জন্য ওয়ানপ্লাস ৮ প্রোতে থাকছে ২.৮৪ গিগাহার্টজ অক্টো-কোর স্ন্যাপড্রাগন ৮৬৫ চিপসেট এবং এড্রিনো ৬৫০ জিপিইউ।এতে আরো থাকছে ৮/১২ জিবি র্যাম ও ১২৮/২৫৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। অ্যান্ড্রয়েড ১০ অপারেটিং সিস্টেম ফোনটি চলবে ওয়ানপ্লাসের নিজস্ব ইউজার ইন্টারফেস অক্সিজেনওস ১০ এর উপর।গেমিং এর পাশাপাশি এর সাহায্যে দারুণ সব ছবি তোলার জন্য থাকছে ৪৮+৮+৪৮+৫ মেগাপিক্সেলের চারটি রিয়ার ক্যামেরা এবং ১৬ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।লম্বা সময় গেমিং করার জন্য এতে থাকছে ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ৪ হাজার ৫১০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। ৩০W ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তির সাহায্যে ফোনটি ২৩ মিনিটে ৫০% পর্যন্ত চার্জ করা যাবে। সাথে থাকছে ওয়ারলেস চার্জিং ফিচার।5. Samsung Galaxy S20 Plus
স্যামসাংয়ের এস সিরিজের লেটেস্ট ফোন Samsung Galaxy S20 Plus এই মুহূর্তে মোবাইল গেমারদের জন্য নিসন্দেহে একটি দারুণ অপশন। ফোনটিতে রয়েছে সুপার-সার্প ১২০ হার্টজ ৬.৭ ইঞ্চি অমলেড ডিসপ্লে, এর রেজুলেশন ৩২০০*১৪৪০ পিক্সেল।গেমিং এর জন্য ফোনটিতে থাকছে ২.৭৩ গিগাহার্টজ অক্টো-কোর এক্সিনোস ৯৯০ চিপসেট। সাথে থাকছে মালি-জি৭৭ এমপি১১ জিপিইউ। অ্যান্ড্রয়েড ১০ অপারেটিং সিস্টেম ফোনটি চলবে ওয়ান ইউআই ২ এর উপর।ফোনটির ৪জি ভার্সনে মিলবে ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। আর এর ৫জি ভার্সনে মিলবে ১২ জিবি র্যাম ও ১২৮/২৫৬/৫১২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। গেমিং এর পাশাপাশি ছবি তোলার জন্য ফোনটিতে থাকছে ১২+৬৪+১২ মেগাপিক্সেল ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা এবং ১০ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। ফোনটির সাহায্যে দারুণ সব ফটোও ক্যাপচার করা যাবে। ব্যাকআপ সুবিধা দিতে এতে থাকছে ৪ হাজার ৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। ৩০W ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তির পাশাপাশি ওয়ারলেস চার্জিং তো থাকছেই।6. ZTE Nubia Red Magic 5G
৫জি সমর্থিত ফোন ZTE Nubia Red Magic মোবাইল গেমারদের জন্য একটি আদর্শ চয়েস। ফোনটিতে থাকছে ফুল ভিউ ১২০ হার্টজ ৬.৬৫ ইঞ্চি অমলেড ডিসপ্লে, এর রেজুলেশন ১০৮০*২৩৪০ পিক্সেল।এতে রয়েছে ২.৮৪ গিগাহার্টজ অক্টো-কোর স্ন্যাপড্রাগন ৮৬৫ চিপসেট এবং এড্রিনো ৬৫০ জিপিইউ যা ভালো গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ওভারহাটিং সমস্যা হতে মুক্তি দিতে ফোনের ভেতরে থাকছে একটি উন্নত কুলিং ফ্যান। অ্যান্ড্রয়েড ১০ অপারেটিং সিস্টেমের ফোনটিতে মিলবে ৮/১২/১৬ জিবি র্যাম ও ১২৮/২৫৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। থাকছে ৬৪+৮+২ মেগাপিক্সেল ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা এবং ১৬ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। ব্যাকআপ সুবিধা দিতে এতে রয়েছে ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ৪ হাজার ৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। ৫৬W ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তির সাহায্যে ফোনটি ১৫ মিনিটে ৫৬% পর্যন্ত চার্জ করা যাবে।7. Asus ROG Phone 2
লিস্টে থাকা আসুসের আরেকটি বেস্ট গেমিং স্মার্টফোন হচ্ছে Asus ROG Phone 2। ফোনটিতে থাকছে ৬.৫৯ ইঞ্চি ১২০ হার্টজ অমলেড স্ক্রিন, এর রেজুলেশন ১০৮০*২৩৪০ পিক্সেল। গেমারদের দারুণ গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দিতে আসুসের এই ফোনে থাকছে ২.৯৬ গিগাহার্টজ অক্টো-কোর স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫+ চিপসেট এবং এড্রিনো ৬৪০ জিপিইউ।অ্যান্ড্রয়েড ৯ অপারেটিং সিস্টেমের ফোরটিতে আরো থাকছে ৮/১২ জিবি র্যাম ও ১২৮/৫১২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। এর পিছনে রয়েছে ৪৮+১৩ মেগাপিক্সেল ডুয়েল ক্যামেরা এবং সামনে রয়েছে ২৪ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা।লম্বা সময় গেমিংয়ের জন্য আসুসের এই ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ৬ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ারের একটি বিশাল বড় ব্যাটারি। রগ ফোন ৩ এর মতো এই ফোনেও থাকছে এক্স মোড, কাস্টমাইজড ইন-কেস কুলিং সলিউশন এবং আল্ট্রা-রিস্পনসিভ এয়ারট্রিগার সেন্সর যা গেমারদের ভালো গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দিতে সাহায্য করবে। 8. Razer Phone 2
রেজার গেমিং জগতের খুবই পরিচিত একটি ব্র্যান্ড। Razer Phone 2 ২০১৮ সালে রিলিজ দেওয়া হলেও এর সাহায্যে এখনো গেমিং করা সম্ভব।রেজার ফোন ২ এ রয়েছে একটি ১২০ হার্টজ ৫.৭২ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে, যার রেজুলেশন ১৪৪০*২৫৬০ পিক্সেল।এতে থাকছে ২.৮ গিগাহার্টজ অক্টো-কোর স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ চিপসেট এবং এড্রিনো ৬৩০ জিপিইউ। অ্যান্ড্রয়েড ৮ অপারেটিং সিস্টেমের ফোনটি পরবর্তীতে অ্যান্ড্রয়েড ৯ এ আপগ্রেড করা যাবে।ফোনটিতে মিলবে ৮ জিবি র্যাম ও ৬৪ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ, যা মাইক্রো এসডি কার্ডের সাহায্যে ৫১২ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। থাকছে ১২+১২ মেগাপিক্সেল ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা এবং ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।ব্যাকআপ সুবিধা দিতে এতে রয়েছে ৪ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তির পাশাপাশি রয়েছে ওয়ারলেস চার্জিং সুবিধা। গেমিং এর সময় যাতে ওভারহাটিং না হয় তার জন্য এতে থাকছে ইন-কেস কুলিং সলিউশন। এই ছিলো বর্তমান সময়ের কিছু সেরা গেমিং ফোন। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আশা করি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে।